স্ত্রী পান্নাকে ভাগিয়ে নিয়ে গেলেন পৌর মেয়র, ভয়ে চুপ রইলেন স্বামী!

আপডেট: নভেম্বর ১০, ২০১৯ ১১:৪৫ অপরাহ্ণ

স্ত্রী পান্নাকে ভাগিয়ে নিয়ে গেলেন পৌর মেয়র, ভয়ে চুপ রইলেন স্বামী!

সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় ব্যবসায়ী রাজন আহমেদের স্ত্রী সহকারী শিক্ষিকা গুলশানারা পারভীন পান্নাকে ভাগিয়ে নিয়ে বিয়ে করেছেন উল্লাপাড়ার পৌর মেয়র আ.লীগ নেতা এস. এম নজরুল ইসলাম। কিন্তু মেয়রের প্রভাবে মামলা তো দূরের থাক, আজ পর্যন্ত কোথাও কোনো অভিযোগও করতে পারেননি গুলশানারার স্বামী রাজন আহমেদ।

এ ঘটনায় উল্লাপাড়া উপজেলার সর্বত্র আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইলেও সমুদ্র সৈকতে গিয়ে দ্বিতীয় স্ত্রী পান্নাকে নিয়ে হানিমুনও করেন মেয়র নজরুল। হানিমুন থেকে ঘুরে এসে ক্লাস ফাঁকি দিয়ে পৌর এলাকার সকল প্রোগ্রামসহ নানা অনুষ্ঠানে পান্নাকে নিয়ে যাতায়াত শুরু করেন মেয়র। তবে হানিমুনের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হবার পর এখন সবাই মুখ খুলতে শুরু করেছেন। খবর জাগোনিউজের।

এদিকে মেয়র নজরুল ইসলামের সঙ্গে বিয়ে হওয়ার পর থেকেই স্কুলে অনিয়মিত হয়ে পড়েছেন গুলশানারা পারভীন পান্না। একদিনের ছুটি নিয়ে দীর্ঘ সময় ধরে অনুপস্থিত তিনি। তবে স্কুলে না এলেও বেতন ঠিকই তুলছেন পান্না। পৌর মেয়রের স্ত্রী হওয়ায় বিষয়টি নিয়ে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কিংবা উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তারা মুখ খুলতে নারাজ।

স্ত্রী পান্নাকে ভাগিয়ে নিয়ে গেলেন পৌর মেয়র, ভয়ে চুপ রইলেন স্বামী!

অভিযোগে জানা যায়, উল্লাপাড়া পৌরসভার মেয়র নজরুল ইসলাম কয়েক বছর আগে পৌর এলাকার ঝিড়িকা বন্দর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একটি অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে যান। ওই অনুষ্ঠানেই সহকারী শিক্ষিকা গুলশানারা পারভীন পান্না নজরে পড়েন মেয়রের। এরপর থেকেই মেয়র বিভিন্ন প্রলোভন দেখান পান্নাকে।কোনোভাবেই যখন পান্না রাজি হয়নি তখন ক্ষমতার দাপট ও তার সন্ত্রাসী বাহিনীর প্রভাব দেখিয়ে পান্নাকে জোরপূর্বক উঠিয়ে নিয়ে বিয়ে করেন মেয়র। এ বিষয়ে কোনো মামলা করলে পান্নার স্বামী রাজন ও তার সন্তানকে হত্যা করবে বলেও হুমকি দেয়া হয়।

মেয়র ও তার সন্ত্রাসী বাহিনীর ভয়ে পান্নার স্বামী রাজন স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিতে কোনো মামলা ও শালিসও ডাকেননি। ১৬ বছর বয়সী সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে তিনি কোনো ঝামেলায় নিজেকে জড়াননি। এরপর থেকেই রাজনকে সবসময় চাপের মুখে রেখেছেন মেয়রের সন্ত্রাসী বাহিনী।

বিতর্কিত এ ঘটনায় উল্লাপাড়ার সর্বত্র আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে। পৌর এলাকায় বিরুপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিলেও দ্বিতীয় স্ত্রী পান্নাকে নিয়ে সমুদ্র সৈকতে গিয়ে হানিমুন করেন মেয়র নজরুল ইসলাম। হানিমুনের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হবার পর সবাই মুখ খুলতে শুরু করেছেন। হানিমুন থেকে এসেই স্ত্রীকে ক্লাসে না পাঠিয়ে সবসময় নিজের সঙ্গে রেখেই নানা অনুষ্ঠানে স্ত্রী পান্নাকে নিয়ে যাতায়াত শুরু করেন মেয়র। পরবর্তীতে প্রভাব দেখিয়ে ঝিড়িকা বন্দর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে গুলশানারা পারভীনকে উল্লাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলি করেন এবং স্ত্রীকে নজরবন্দিতে রাখেন মেয়র ও তার বাহিনী।

গুলশানারা পারভীন পান্নার স্বামী ব্যবসায়ী রাজন আহমেদ রোববার সকালে সাংবাদিকদের বলেন, আমার দীর্ঘ ১৮ বছরের সংসার ভেঙে তছনছ করে দিয়েছেন মেয়র নজরুল ইসলাম। আমাদের একমাত্র সন্তান রয়েছে। আমার স্ত্রীকে জোরপূর্বক মেয়র সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে তুলে নিয়ে বিয়ে করেছেন এবং হুমকি দিয়ে বলে গেছেন, এ বিষয়ে মুখ খুললে আমাকে ও আমার সন্তানকে হত্যা করা হবে। আমার স্ত্রীকে জোরপূর্বক বিয়ে করায় আমার মান-মর্যাদা ধুলায় মিশে গেছে। আমার সন্তানও স্কুলে মর্যাদা পায় না। বহু কষ্টে জীবনযাপন করছি আমরা। তারপরও সবসময় মেয়রের লোকজন আমাকে নানা প্রকার চাপের মধ্যে রেখেছে। কোনো অভিযোগ যেন কোথায় না করি, করলেই আমাকে হত্যা করা হবে বলে ভয় দেখায়। তাদের ভয়ে আমি কোনো ব্যবস্থা নেইনি। তবে মেয়র পদের মেয়াদ শেষ হলে সকল আইনি ব্যবস্থা আমি গ্রহণ করবো। তাদের ভয়ে আমি সন্তানকে নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।

স্ত্রী পান্নাকে ভাগিয়ে নিয়ে গেলেন পৌর মেয়র, ভয়ে চুপ রইলেন স্বামী!

এ বিষয়ে রোববার সকালে উল্লাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক চিত্তরঞ্জন রায় বলেন, গুলশানারা পারভীন পান্নার ঝিড়িকা বন্দর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থাকতে মেয়র নজরুল ইসলামের সঙ্গে বিয়ে হয়। ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে আমার বিদ্যালয়ে বদলি হয়ে আসেন। তবে স্কুল ফাঁকির বিষয়ে তিনি বলেন, পৌর এলাকায় স্কুল, পৌর এলাকার মেয়রের স্ত্রী, ফাঁকি দিলে আমাদের কিছু করার থাকে না।

তবে এ বিষয়ে বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস সিরাজগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি অ্যাডভোকেট শহীদুল ইসলাম বলেন, জনগণের ভোটে নির্বাচিত কোনো জনপ্রতিনিধি অন্যের স্ত্রীকে ভাগিয়ে নিয়ে বিয়ে করতে পারেন না। কারণ নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা হচ্ছেন সকলের অভিভাবক। অথচ সেই অভিভাবকই যদি অন্যের স্ত্রীকে ভাগিয়ে নিয়ে বিয়ে করেন তাহলে সেই এলাকার জনগণ বিচার চাইবে কার কাছে?

এ বিতর্কিত কর্মকাণ্ড সাধারণ মানুষ মেনে নিতে পারে না। তবে এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ যদি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে দেয় এবং তদন্তে অভিযোগটি প্রমাণিত হয় তাহলে সেই জনপ্রতিনিধিকে অপসারণ করতে পারে ‘জনপ্রতিনিধি দায়িত্ব কর্তব্য আইন’র দ্বারাই।

এ বিষয়ে উল্লাপাড়ার পৌর মেয়র নজরুল ইসলাম বলেন, গুলশানারা পারভীন পান্না আমার স্ত্রী। তবে তিনি দ্বিতীয় বিয়ে সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

Source URL: https://www.coxsbazarvision.com/archives/62537

সম্পাদক ও প্রকাশক : আনছার হোসেন

© ২০২০ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | কক্সবাজার ভিশন
হোটেল নিরিবিলি (নিচতলা), কক্ষ নং- ১০৪, শহীদ সরণী, কক্সবাজার
মোবাইল: ০১৬১৮-৮০০১০০, ০১৯১৮-৮০০১০০ । ইমেইল: coxsbazarvision@gmail.com, ansar.cox@gmail.com