পেকুয়ায় ছাত্রীকে বাথরুমে নিয়ে ‘যৌন নিপীড়ন’ করলো দপ্তরী!

নিজস্ব প্রতিবেদক, পেকুয়া
কক্সবাজার ভিশন ডটকম
কক্সবাজারের উপকূলীয় উপজেলা পেকুয়ায় ৩য় শ্রেণীর এক ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ উঠেছে স্কুল দপ্তরী মোঃ ইউসুফের বিরুদ্ধে।
রোববার (৩ নভেম্বর) বিকালে মগনামা ইউনিয়নের মধ্য মগনামা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এই যৌন নিপীড়নের ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় ভিকটিমকে উদ্ধার করার পাশাপাশি কয়েকদফা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে পুলিশ।
পলাতক থাকায় এই ঘটনায় অভিযুক্ত দপ্তরী একই ইউনিয়নের পশ্চিমকুল এলাকার মৃত আবু ছৈয়দের ছেলে মোঃ ইউসুফকে ধরতে পারেনি পুলিশ।
ভিকটিমের বাবা ছরওয়ার আলম বলেন, স্কুল থেকে আমার মেয়ে আসার পর তার শরীরে আঘাতের চিহ্ন দেখতে পাই। কারণ জানতে চাইলে সে জানায়, তার সাথে দপ্তরী ইউসুফ খারাপ কাজ (ধর্ষণ) করেছে। দ্রুত স্কুলের প্রধান শিক্ষক নিশাত জাহানকে আমি ঘটনাটি জানাই। তিনি কোন ধরণের সহযোগিতা না করায়, পরে ইউপি চেয়ারম্যান শরাফত উল্লাহ চৌধুরী ওয়াসিমকে জানাই। তিনিই ঘটনাটি থানা পুলিশকে জানান।
তিনি বলেন, রাতেই পুলিশ বাড়িতে এসে আমার মেয়েকে থানায় নিয়ে গেছে। আমরা পুলিশকে ধর্ষণের বিষয়টি জানিয়েছি।
তবে স্কুলের প্রধান শিক্ষক নিশাত জাহান বলেন, মেয়েটি আমাকে ধর্ষণের কথা বলেনি। শুধু বলেছে তাকে টয়লেটে নিয়ে যৌন নিপীড়ন করেছে স্কুলের দপ্তরী ইউসুফ। আমরা বিষয়টি সমাধান করার জন্য অন্য কাউকে অবগত করিনি।
স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি আবদুল্লাহ ফারুক বলেন, দিনের ঘটনা হলেও আমি বিষয়টি জেনেছি রাতে। তাৎক্ষনিকভাবে বিষয়টি আমি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও ইউপি চেয়ারম্যানকে জানিয়েছি। তবে প্রধান শিক্ষক এবিষয়ে আমাকে কিছুই জানাননি।
মগনামা ইউপি চেয়ারম্যান শরাফত উল্ল¬াহ ওয়াসিম বলেন, স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণের কথা পরিবার থেকে আমাকে জানানো হয়েছিল। রাতেই আমি থানার ওসিকে বিষয়টি অবগত করি। থানা পুলিশ ঘটনাটি তদন্ত করছে, তাই আমি ধর্ষণ বা ধর্ষণ চেষ্টা কিনা তা এখন মন্তব্য করতে পারবো না।
এব্যাপারে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সালামত উল্লাহ বলেন, ঘটনাটি জানার পর থানার ওসির সাথে আমি ওই স্কুলে গিয়েছি। সবার সাথে কথা বলেছি। পুলিশ ঘটনাটি তদন্ত করে ব্যবস্থা নিবেন বলে আমাকে জানিয়েছেন।
পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল আজম বলেন, পরিবার থেকে ধর্ষণের অভিযোগ করা হলেও মনে হচ্ছে যৌন নিপীড়নের ঘটনা। আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রাথমিক তদন্ত করেছি। ভিকটিম ও তার পরিবারের সাথে কথা বলেছি। অভিযুক্তকে আটকের চেষ্টা চালোনো হচ্ছে।
এদিকে স্কুল শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, মোঃ ইউসুফ দপ্তরী নিয়োগ পাওয়ার পর থেকে স্কুলে প্রভাব দেখাতে শুরু করেন। বিনাকারণে সে শিক্ষার্থীদের মারধর করতো। গত দুইবছর আগেও এক স্কুল শিক্ষার্থীকে যৌন নিপীড়ন চালিয়েছিল এই দপ্তরী। তার কোন বিচার না হওয়ায় তিনি আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠেছেন। এবারেও হয়তোবা তিনি অদৃশ্য শক্তির কারণে পার পেয়ে যাবেন।
এ দুশ্চরিত্র দপ্তরীকে আটক করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন তারা।